তিনি বড়ই চঞ্চল ....
তবে অকৃতজ্ঞ দুষ্টু মর্তবাসী কিন্তু এই চঞ্চল-সুখ-সমৃদ্ধি-শান্তি প্রদানকারী দেবীকে তেমন একটা জাঁক-জমকের সঙ্গে পূজো করেন না। তাঁর মায়ের ফেলে যাওয়া পূজা মন্ডপেরই এক কোণে কোনো মতে পূজো সারেন। তবে এটা হল বাইরের চিত্রটা। গোপন বিষয়টা হল,সবাই চায় এই দেবীকে নিজের ঘরে আটকে রাখতে। তাই একটু উকি-ঝুকি মারলে দেখা যাবে বাংলার বেশ অনেক ঘরেই দেবীর আরাধনা চলছে জমিয়ে।
অবশেষে দূর্গা দূর্গা করে মিটলো বাঙালীর সবচেয় বেশি প্রতীক্ষিত পূজো , তবে মিটলো বললেই তো আর হল না,বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে মা কৈলাসে পৌঁছালো কি পৌছালো না,ওমনি তাঁর কন্যা,নারায়নের অর্ধাঙ্গিনী, লক্ষ্মিদেবী মর্তবাসীর টানে আরও একবার দেখা করে যেতে চান ভক্তদের সঙ্গে। এসে উপস্থিতও হন ঠিক দুইদিন পর।

বলা হয় শরৎ-এর যেরাতে চাঁদ পূর্ণরূপে দেখা দেয়,বছরের সবচেয়ে ঝলমলে সেই রাতে লক্ষ্মিদেবী তাঁর বাহন পেঁচাকে সঙ্গে করে বিরাজমান হন তার ঝাঁপি নিয়ে,যাতে ঠাঁসা থাকে সুখ-সমৃদ্ধি-ঐশ্বর্য্য। তবে এই পূজোটা করে মূলত পূর্ববাংলার মানুষরা।যাকে বলে কোজাগরী লক্ষ্মি। নতুন ধান দিয়ে মাকে বরণ করা হয়। সাথে থাকে বিভিন্ন রকমের নারু,মোয়ার সমাহার।
আবার কালিপূজোর রাতেও এই পূজো হয়ে থাকে। আগেই বলেছি এই দেবী বড়ই চঞ্চল। আবার অন্যদিকে, কেউই চঞ্চল দেবী বাড়িতে রাখতে চায় না। তাকে তাড়ানোর দরকার। তাই এইবার যে পূজোটা হয়,তা হল সেই চঞ্চল দেবীকে বাড়ির বাইরে বের করে,শান্ত-ধীর দেবীকে স্বাগত জানানো।
মজার কথা এই যে,এই দেবীকে আর কেউ বলে না আসছে বছর আবার এসো। মনে মনে সবাই-ই চায় মাকে ধরে বেঁধে আটকে রাখতে নিজের বাড়িতে,সারা জীবনের জন্য।