Friday, 24 October 2014

তিনি বড়ই চঞ্চল ....

অবশেষে দূর্গা দূর্গা করে মিটলো বাঙালীর সবচেয় বেশি প্রতীক্ষিত পূজো , তবে মিটলো বললেই তো আর হল না,বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ। ছেলে-মেয়েকে নিয়ে মা কৈলাসে পৌঁছালো কি পৌছালো না,ওমনি তাঁর কন্যা,নারায়নের অর্ধাঙ্গিনী, লক্ষ্মিদেবী মর্তবাসীর টানে আরও একবার দেখা করে যেতে চান ভক্তদের সঙ্গে। এসে উপস্থিতও হন ঠিক দুইদিন পর।

তবে অকৃতজ্ঞ দুষ্টু মর্তবাসী কিন্তু এই চঞ্চল-সুখ-সমৃদ্ধি-শান্তি প্রদানকারী দেবীকে তেমন একটা জাঁক-জমকের সঙ্গে পূজো করেন না।  তাঁর মায়ের ফেলে যাওয়া পূজা মন্ডপেরই এক কোণে কোনো মতে পূজো সারেন। তবে এটা হল বাইরের চিত্রটা। গোপন বিষয়টা হল,সবাই চায় এই দেবীকে নিজের ঘরে আটকে রাখতে। তাই একটু উকি-ঝুকি মারলে দেখা যাবে বাংলার বেশ অনেক ঘরেই দেবীর আরাধনা চলছে জমিয়ে। 

বলা হয় শরৎ-এর যেরাতে চাঁদ পূর্ণরূপে দেখা দেয়,বছরের সবচেয়ে ঝলমলে সেই রাতে লক্ষ্মিদেবী তাঁর বাহন পেঁচাকে সঙ্গে করে বিরাজমান হন তার ঝাঁপি নিয়ে,যাতে ঠাঁসা থাকে সুখ-সমৃদ্ধি-ঐশ্বর্য্য। তবে এই পূজোটা করে মূলত পূর্ববাংলার মানুষরা।যাকে বলে কোজাগরী লক্ষ্মি।  নতুন ধান দিয়ে মাকে বরণ করা হয়। সাথে থাকে বিভিন্ন রকমের নারু,মোয়ার সমাহার। 

আবার কালিপূজোর রাতেও এই পূজো হয়ে থাকে। আগেই বলেছি এই দেবী বড়ই চঞ্চল। আবার অন্যদিকে, কেউই চঞ্চল দেবী বাড়িতে রাখতে চায় না। তাকে তাড়ানোর দরকার।  তাই এইবার যে পূজোটা হয়,তা হল সেই চঞ্চল দেবীকে বাড়ির বাইরে বের করে,শান্ত-ধীর দেবীকে স্বাগত জানানো। 

মজার কথা এই যে,এই দেবীকে আর কেউ বলে না আসছে বছর আবার এসো। মনে মনে সবাই-ই চায় মাকে ধরে বেঁধে আটকে রাখতে নিজের বাড়িতে,সারা জীবনের জন্য। 

Tuesday, 21 October 2014

ছুটি ছুটি......



আমি অলস বাঙালি। ভাবতে ভালোবাসি।  পূজো আসছে ,ছুটি পাবো-ভাবতেও কত ভালোলাগে। কিন্তু যত বয়স হচ্ছে , ছোটবেলার সেই লম্বা ছুটিটাও কেমন যেন কিপটে হয়ে গেছে।

পূজোর মানে আমার কাছে কেবলই কেনাকাটা কিংবা সেজেগুজে মন্ডপে ঘুরে বেড়ানোর গন্ডিতে আটকে নেই। আগেই বলেছি আমি অলস প্রকৃতির,তাই ছুটিটাও একটা বড় খোরাক জোগায় আমার ভালোলাগার।

ছুটি তো পেলাম,এবার সেটা কীভাবে খরচা করবো? এটা কিন্তু একটা বড় প্রশ্ন।এখন তো আর সেই লম্বা ছুটির যুগ নেই। তাই এই কিপটে  ছুটিটাকেই ম্যানেজ করে চলতে হয়।  কেউ এটা শহরের বাইরে গিয়ে কাটাতে চায়,কেউ কেউ আবার অত খরচার ঝামেলাতে একেবারেই না গিয়ে বাড়িতেই শুয়ে-ঘুমিয়ে কাটিয়ে দেয়। তবে আমার  মত কিছু বুদ্ধিমান মানুষও তো রয়েছে , তারা কিম্তু নিজের শহরে আড্ডা দিয়ে,খেয়ে,ঘুরে বেড়াতেই বেশি ভালোবাসে।


পূজো ভালোভাবে দেখতে গেলে পাঁচ দিনের ব্যাপার,আসছে আসছে-তাই ভালো,এলেই ফুরুৎ  হয়ে যায়। তবে ছোটবেলায় পূজো  ফুরুৎ হলেও কিন্তু তার ছুটি চলতো টানা ভাইকে ফোঁটা দেওয়া অবদি। সে এক সুখকর স্মৃতি। সকাল বেলায় অপেক্ষায় থাকতাম "ছুটি ছুটি" দেখার।

ছোটোবেলায় ভাবতাম কবে বড় হবো, এখন ভাবি কেন ছোটবেলায় এই বাজে বেপারটা ভাবতাম ! আমি সরকারের গদিতে একবার বসলে আমার প্রথম কাজ হবে এই পূজোর ছুটিটা টেনেটুনে  অবশ্যই ৩০দিনের করার । তখন দেখবো কোথায় পালায় এই কিপটে  ছুটি।